আমাদের পৃথিবীটা কতই না সুন্দর! চারদিকে ছড়িয়ে আছে অনেক আনন্দ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন 'আনন্দধারা বহিছে ভুবনে'। এই আনন্দের মধ্য দিয়ে করব প্রকৃতি পাঠ। আমরা যদি আমাদের চারপাশে তাকাই তাহলে দেখব প্রাকৃতিক নানা বিষয়বস্তু ও উপাদান, যেমন- আকাশ, বাতাস, পানি, মাটি, সূর্য, চাঁদ, তারা, নদী, পাহাড়, খাল, বিল, গাছপালা, ফুল, ফল, পশু, পাখি প্রভৃতি। এই সব প্রাকৃতিক উপাদান ও বিষয়বস্তু আমাদের সৃজনশীল কাজের প্রধান উৎস।
প্রকৃতির এই সব উপাদানের মধ্যে অন্যতম একটি হলো গাছ। তোমরা কি জানো গাছের অনুভূতি আছে? এটি আমাদের জানিয়ে ছিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু। গাছ আমাদের পরম বন্ধু। গাছ আমাদের শেখায়। কী করে কষ্ট সহ্য করে অন্যকে সাহায্য করতে হয়। গাছ থেকে আমরা শিখি, শিকড়হীন হলে চলবে না। শিকড়ই তাকে বাঁচিয়ে রাখে। তেমনি আমাদের শিকড় হবে দেশীয় সংস্কৃতি। আমরা নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চার মাধ্যমে আমাদের শিকড়কে শক্ত করব। সৃজনশীলতা দিয়ে আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরব।
আমাদের চারপাশের প্রকৃতিতে রয়েছে অনেক রকমের গাছ। প্রতিটি গাছের ডালপালা, শিকড়, কাণ্ড, পাতা, ফুল, ফলের আকার-আকৃতি, গড়ন, রং আলাদা। যেমন, আম গাছের সাথে পার্থক্য রয়েছে কাঁঠাল গাছের তেমন পার্থক্য রয়েছে পলাশের সঙ্গে শিমুলের বটের সাথে অবথের। গাছের ভিতর দিয়ে যখন বাতাস বয়ে যায়, তার স্পর্শে গাছেরা শব্দ করে দুলে উঠে। সে শব্দ আর দুলনিতেও আমরা অনুভব করি ভিন্নতা। এবার আমরা প্রকৃতির অংশ হিসেবে গাছ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিব।
আমরা আমাদের পছন্দ মত একটি গাছ নির্বাচন করব। আমাদের ভালোলাগার গাছটির সকল দিক (ডালপালা শিকড়, কাজ, পাতা, ফুল, ফলের আকার, আকৃতি, রঙ) পঞ্চ ইন্দ্রিয় (চোখ, কান, নাক, জ্বিহ্বা, ত্বক) এর সাহায্যে সতর্কতার সঙ্গে দেখে, শুনে, স্পর্শ করে, অথবা গান, গল্প উপলব্ধি করে গাছটি সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও গভীর অনুভূতি অর্জন করবা।
আমরা কি জানি, শিল্পকলার মধ্যে রয়েছে অনেকগুলো শাখা, যেমন চারু ও কারুকলা, নৃত্য, সংগীত, যন্ত্রসংগীত, আবৃত্তি, অভিনয়, সাহিত্য ইত্যাদি। প্রত্যেক শাখার রয়েছে নিজস্ব ধরণ ও নিয়মনীতি। আমরা আমাদের ভালোলাগার গাছ সম্পর্কে বাস্তব ধারণা আর গভীর অনুভূতি পেলাম। এই অনুভূতিকে কল্পনার সাথে মিলিয়ে শিল্পকলার যে কোনো একটি পছন্দমতো মাধ্যমে সহজভাবে প্রকাশ করতে পারি। এই নিয়ে সহপাঠীদের সাথেও আলোচনা করতে পারি।
এই অধ্যায়ে আমরা যা যা করতে পারি -
এবার নিজেদের পছন্দ মতো রং-বেরঙের কাগজ দিয়ে, নকশা করে মলাট বানিয়ে আমরা একটি খাতা তৈরি করব। এই খাতায় আমরা এক লিখব। প্রয়োজন অনুসারে পত্রিকার অংশ, পাতা, ফুল ইত্যাদি যা খা আমাদের পছন্দের দিয়ে লাগিয়ে সংরক্ষন করে রাখব। বিভিন্ন সময়ে অংশগ্রহণ করা নাচ, সম্পর্কে লিখে রাখব। যা হবে আমাদের সবসময়ের বন্ধু। আমাদের এই মাতার নাম হবে 'বখাতা"।
বিশ্ব বিখ্যাত শিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এমনি অনেক ফেড যাত্রা ছিল, যাতে শিল্পী সবকিছু উল্টো করে লিখে রাখতেন। মাতার সেসব লেখা আয়নার সামনে রেখে সোজা করে পড়তে হতো। শিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চি সম্পর্কে আমরা পরে আরও জানব। আমরাও চাইলে আমাদের বহুপাতায় এমন অনেক মজার মজার কাজ করতে পারি।
'আনন্দধারা' বিষয়টিতে নিজের অনুভূতি শিল্পকলার যে কোনো একটি শাখায় প্রকাশের পর, আমরা শিক্ষকসহ সহপাঠীদের অনুভূতি ও মতামত জানতে পারি। অন্য সহপাঠীদের পরিবেশনের বিষয়ে সুন্দরভাবে নিজের অনুভূতি ও মতামত জানাতে পারি।
আরও দেখুন...